সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের নির্যাতনকারী কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে রোমহর্ষক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ মানুষ। রাতের আঁধারে সাধারণ মানুষদের বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নির্যাতন শেষে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতেন আরডিসি নাজিম উদ্দিন। চাঁদার টাকা না দিতে পারলে তার নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যেতো। প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের নির্যাতনকারী এ আরডিসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
বিশ্বনাথ নম দাস। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের আরডিসি নাজিম উদ্দিনের ভয়াবহ নির্যাতনের সবশেষ শিকার তিনি। ভর্তি আছেন কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। বিশ্বনাথ জানান, নাগেশ্বরী উপজেলায় গিরাই নদীর জলাশয় দেবীকুড়ায় মাছ চাষ করেতন বিশ্বনাথসহ চার জন। পরে হাইকোর্ট এটিকে উন্মুক্ত জলায়শয় ঘোষণা করলে এ নিয়ে রিট করেন সুফলভোগীরা। পরে সব স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে দেবীকুড়া দখলে নেন আরডিসি নাজিম উদ্দিন। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিশ্বনাথ নম দাস ও প্রতিবেশী মজনুকে আটক করে নির্যাতনের পর বিশ্বনাথকে ২ বছর ও মজনুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। পরদিন মজনুকে টাকার বিনিময়ে জামিন দিলেও বিশ্বনাথকে কারাগারে রেখে নির্যাতন করেন আরডিসি নাজিম উদ্দিন।
বিশ্বনাথ নম দাস বলেন, বিছানা থেকে তুলে মার শুরু করেন এবং তার চেম্বারে নিয়ে এসে আবার মারধর করেন। আমাকে বলেন, তোমার তো ক্রসফায়ারের অর্ডার হয়ে গেছে দুই লাখ টাকা দাও তোমাকে ছেড়ে দেব।
শুধু বিশ্বনাথই নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাতের অন্ধকারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নিরীহ মানুষকে নির্যাতন শেষে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে আরডিসি নাজিম উদ্দিন চাঁদাবাজি করতেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এক ভুক্তভোগী বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসে আমার স্বামীকে মারধর শুরু করে ধরে নিয়ে যায়। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠায়।
অবিলম্বে আরডিসি নাজিম উদ্দিনের কুকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জেলার হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এসএম ছানালাল বকসী। তিনি বলেন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন যে নির্মম অত্যাচার করেছে সেটা মারাত্মক অন্যায়। আমরা এর বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বারবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করলেও কথা বলা যায়নি আরডিসি নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে।
